নিজস্ব প্রতিবেদক
বরিশালের মুলাদী উপজেলার আজাহার উদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবনির্বাচিত কমিটির সভাপতি একেএম বখতিয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে নির্বাচিত হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তার এই দূনীর্তির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানালে শিক্ষকদের অবরুদ্ধ করে রাখাসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। এটি অবৈধ নির্বাচন দাবী করে তা বাতিলের জন্য বরিশাল শিক্ষাবোর্ডে আবেদনও করা হয়েছে। অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, মুলাদী উপজেলার পূর্বচর কুতুবপুর গ্রামের আজাহার উদ্দিন নিজ চেষ্টা ও অর্থায়নে ১৯৮৭ সালে আজাহার উদ্দিন নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। পরে সেটি মাধ্যমিক স্কুলে রূপান্তরিত হয়। পরবর্তীতে তার দুই ছেলে সুইজারল্যান্ড প্রবাসী মোঃ কুতুব ভূইয়ার অর্থায়নে ও দেশে থাকা সোহেল ভূইয়ার অক্লান্ত পরিশ্রমে ২০০১ সালে বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্ত হয়। সেই সাথে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ফলাফলে এলাকায় সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। বিদ্যালয়ের এই অবস্থানে বিশেষ সুবিধা আদায়ের লক্ষ্যে স্থানীয় কয়েক ব্যাক্তি স্কুল দখলের পায়তারা চালাতে শুরু করেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৩ নভেম্বর অনুষ্ঠিত স্কুল পরিচালনা কমিটির নির্বাচনে সভাপতির পদে ৩৫ বছর ধরে ঢাকায় বসবাস করা বখতিয়ার ভূইয়া অংশ নেন। তিনি নির্বাচনের আগে থেকেই তাকে ভোট দেয়ার জন্য ভোটারদের নানাভাবে ভয়ভীতি দেখাতে শুরু করেন। এমনকি অনেককে টাকা দিয়েও ম্যানেজ করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয় নির্বাচনের দিন স্কুলের প্রধান শিক্ষক (পদাদিকবলে সদস্য সচিব)ননী গোপাল দাসকে ভোট কেন্দ্র উপস্থিত থাকতে না দেয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তার এই অনৈতিক কর্মকান্ডে ক্ষুব্ধ হন স্কুলের শিক্ষক-কর্মচারী, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা। তারা এর প্রতিবাদ জানালে তিনি তাদের নানাভাবে হৃমকি প্রদান করেন বলে জানা গেছে। নির্বাচনের পর তার এই সেচ্ছাচারীতায় অতিষ্ট হয়ে গত ৩ নভেম্বরের অনৈতিক নির্বাচন বাতিলের দাবী জানিয়ে বরিশাল শিক্ষাবোর্ডে আবেদন করেছেন ভোটাররা। স্কুলের বর্তমান সভাপতি মোঃ সোহেল ভূইয়া জানান, বখতিয়ার ভূইয়া অনেকটা উড়ে এসে জুড়ে বসেছেন। এই স্কুল প্রতিষ্ঠা কিংবা উন্নয়নের সাথে তার বিন্দুমাত্র সম্পর্ক নেই। ঢাকায় বসবাসের সুবাদে তিনি গত প্রায় ৩৫ বছরেও গ্রামের সাথে কোন যোগাযোগ রাখেননি। স্কুলটি এমপিওভুক্ত হওয়ায় বিশেষ ফায়দা লুটতে তিনি কিছু মানুষকে ভয়ভীতি দেখিয়ে সভাপতি পদে নির্বাচন করেন। সেইসাথে নিয়োগ বানিজ্যেরও পায়তারা চালাচ্ছেন তিনি। এদিকে বখতিয়ার ভূইয়ার কার্যক্রমে সবাই ফুসে উঠলে সে ক্ষেপে গিয়ে গত ০১ জানুয়ারী বই উৎসবে উপস্থিত হয়ে স্কুলের নির্মানাধিন ভবনের কর্মচারীদেরকে গালাগালি এবং শারীরিক ভাবে নির্যাতন করে পরের দিন গত ০২ জানুয়ারী তার বড় ভাই নাসির ভূইয়া ( প্রাক্তন সভাপতি ) স্কুলের শিক্ষকদের লাইব্রেরী রুমে আটকিয়ে ভেতর থেকে তালাবন্ধ করে অকথ্য ভষায় গালাগালি হুমকি প্রদান করেন। সেই সাথে স্কুল বন্ধ করে দেয়ারও হুমকি দেন। এমনকি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে শিক্ষকদের বেতন বন্ধেরও হুমকি দেন। এসব ঘটনায় শিক্ষক ও অভিভাবকরা অতিশীগ্র এ নির্বাচন বাতিল করে লেখাপড়ার পরিবেশ ফিরিয়ে দেয়ার আহবান জানান।
Leave a Reply